বিয়ের আগে যা জানতে হবে
যারা বিয়ে করার কথা ভাবছেন বা পরিকল্পনা করেছেন তাদের জন্য কথাগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ্য ।
কিছু রোগ আছে যা বাহিরে থেকে বুঝা যায়না।
কিন্তু খুব সহজে বিয়ের পর স্বামী থেকে বউ আবার বউ থেকে স্বামী । যখন তারা সন্তান নেয় তখন এটি ছড়াতে পারে।
একটু সচেতন হলেই আগেই কিছু টেষ্ট করলে রোগ গুলো ধরা সম্ভব বা চিকিৎসা করে ,
এই রোগের বিস্তাররোধ করা কিন্তু সম্ভব।
মোট ছয়টি পরীক্ষার কথা বলবো। যা খুব সহজেই বুঝিয়ে দিবো।
১। থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা:
প্রায় ৫ বছর আগের কথা তখন আমি মেডিকেলে পড়ি।
সে সময় ফোন পেয়েছিলাম একটা রোগীকে রক্তদান করতে হবে, গিয়ে দেখি যার রক্ত লাগবে সে একজন শিশু। তার বয়স হবে ৯/১০ বছর। তার প্রতি মাসে রক্ত লাগে।
প্রতি মাসে রক্ত দিতে ওর পরিবারের ভিষণ কষ্ট হয়। তারপরেও শিশুটির পরিবার তাদের সাধ্যমত শিশুটি চিকিৎসা চালিয়ে আরছে।
এই শিশুটার যে রোগ হয়েছিল, তার নাম “থ্যালাসেমিয়া”।
থ্যালাসেমিয়া রোগ একটি অপ্রতিরোধযোগ্য ।
সাধারণত রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায়, আপনার শিশু থ্যালাসেমিয়া হওয়ার সম্ভবনা আছে কিনা।
যেহেতু এই সন্তানের বাবা-মা তাদের এই টেষ্টটি করান নি।
তাই তারা জানতো তাদের সন্তানের এই জটিল রোগটি হতে পারে।
বিষয়টি কিন্তু সবার কাছে খুব গুরুতপূর্ণ্য । সেই শিশুর বিষয়টি দিয়ে সহজ করে বলি।
শিশুর এই জটিল রোগটি এসেছিল তার বাবা-মার কাছে থেকে বাবা-মা দুজই থ্যালাসেমিয়া মাইনর ছিল। তারা তা জানতেন না।
তারা সম্পূর্ণ্য সুস্থ্য ছিলেন।
বিয়ের আগে যা জানতে হবে
তারা এটা নিয়ে কোন চিন্তাও করিনি কারণ এ রোগের কোন লক্ষণ তারা দেখতে পাননি। যাদের থ্যালাসেমিয়া মাইনর থাকে তাদের মধ্য এমনটা হয়ে থাকে।
তারা সমর্ম্প্যূ সুস্থ্য থাকে কিন্ত কখনো হঠাৎ রক্ত শুন্যতা দেখা দেয়।
যখন তাদের সন্তান থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্ম গ্রহণ করে তখন বাবা-মা জানতে পারে। তখন তারা জানতে পারে তাদের থ্যালাসেমিয়া ছিল।
এতো দিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে তাদের সন্তান গুরুতর রোগ নিয়ে পৃথিবীতে এসেছে।
যা শিশুটাকে সারা জীবন ভুগতে হবে। তবে করণীয় কি?
বিয়ের আগেই দুজনকেই রক্ত পরীক্ষা করতে হবে।
তাহল্ইে তখন ধরা পরবে বিয়ের পর আপনার সন্তানের থ্যালাসেমিয়া রোগ হওয়ার সম্ভবনা আছে কিনা।
তবে একবার রক্ত পরীক্ষা করতে বর্তমানে ১৫০০ টাকা খরচ হতে পারে।
খরচ বেশি হলেও পরীক্ষা করা সবার দরকার। ভবিষৎতের কথা চিন্তা করলে কিন্তু এটা বেশি কিছু না। রক্ত পরীক্ষা করলে কি ধরনে ফলাফল আসতে পারে। সেটি হতে পারে তিন ধরনের। যেমন:-থ্যালাসেমিয়া মাইনর
১। দুজনেইর একজনেরও রক্তের কোন সমস্যা নেই।
২। দুজনের মধ্যে একজনের থ্যালসেমিয়া ধরা পরলে সে জন্য বাচ্ছার থ্যালাসেমিয়া নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কোন কারণ নেই।
তবে সন্তানের ৫০% থ্যালাসেমিয়া হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
৩। দুজনেইর থ্যালাসেমিয়া মাইনর ধরা পড়লে সন্তানের থ্যালাসেমিয়া হওয়ার সম্ভবনা আছে।
এই সব তথ্যের ভিত্তিতে সিন্ধান্ত নিতে হবে, দুজনেই বিয়ে করবেন কিনা।
আর যদি বিয়ে করেন তবে বিয়ের পর সন্তান নিবেন কিনা। সে বিষয়ে সিন্ধান্ত নিতে হবে।
বিয়ের আগে যা জানতে হবে
হেপাট্রাইটিস বি ভাইরাস:– হেপাটাইটিস বি একটি ভাইরাস যা আমাদের লিভারে বড় সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এটির কারণে ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে।
যাদের শরীরে এই ভাইরাস আছে তারা অনেকেই জানেনা তার এই জটিল ভাইরাসে আকাক্র।
ফলে নিজের অজেন্তানে এই ভাইরাস মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছে।
সুরক্ষা ছাড়া সহবাস করলে এই ভাইরাস একজন থেকে আরেকজন ছড়িয়ে যাবে।
তাই সহবাস করলে কনডম ব্যবহার করতে হবে।
অতএব দুজই বিয়ের আগে হেপাটাইটিস বি ভাইরাস পরীক্ষা করে নিবেন। এবং হেপাটাইসি বি ভাইরাস ধরা পরলে অবশ্যই টিকা নিতে হবে। ২০০৩ সালে বাংলাদেশে এই টিকা শিশুদের দেওয়া হয়। তাই আপনার জন্ম ২০০৩ সাল এর আগে হলে টিকা নিতে হবে পারে ভবিষৎত সুরক্ষার কথা চিন্তা করে।
হেপাট্রাইটিস সি:- হেপাটাইটিস বি এর মতো হেপাটাইটিস সি এক ধরনের ভাইরাস।
যা লিভারের ক্ষতি করতে পারে।
এটি ছড়ায় রক্তের মাধ্যমে একই সুই বা ইনজেকশন ব্যবহার করলে যাতে আকাক্র ব্যক্তির রক্ত লেগে থাকতে পারে।
সেজন্য চিকিৎসার যন্তপাতি ঠিকভাবে পরিষ্কার ও জীবাণূ মুক্ত রাখতে হবে।
অজান্তেই অনেকেই এই হেপাটাইটিস সি ভাইরাসে আক্তান্ত হতে পারেন।
তাই বিয়ের আগে দুজনই এই হেপাটাইটিস সি পরীক্ষা করতে হবে। হেপাটাইটিস সি চিকিৎসা করলে সম্পূণ্যরুপে ভালো হয়।
এইচ আইভি পরীক্ষা:- এইচ আইভি ভাইরাস আপনারা অনেকেই জানেন এটি আক্তান্ত ব্যক্তির সাথে সহবাসের মাধ্যমে ছড়ায়।
অনেকের শরীরে এই ভাইরাস র্দীঘ দিন সুপ্ত অবস্থায় থাকে ।
তাই পরীক্ষা করা সবার জন্য শেয় বিশেষ করে যারা বিবাহ করতে পরিকল্পনা করছেন।
পরীক্ষা মাধ্যমে ভাইরাস ধরা পরলে চিকিৎসার মাধ্যমে এ ভাইরাস এর পরিমান কমিয়ে আনা সম্ভব।
যৌনবাহিত রোগ পরীক্ষা:- অনেকেই আমরা যৌনবাহিত রোগে আকাক্র তা আমরা জানিনা।
পরীক্ষা করার পর এটি আমরা জানতে পারি। অনেক সময় যৌনবাহিত রোগের কোন লক্ষণ না থাকায় কেউ সহজে বুঝতে পারেনা।
তাই আমাদের উচিৎ হবে দাম্পত জীবন শুরু করার আগে এই বিষয়গুলিকে পরীক্ষা করা।
এতে করে নিজে সুরক্ষিত থাকবে পাশপাশি ভবিষৎ প্রজন্ম এই রোগ থেকে মুক্তি পাবে।
আমাদের সকলের শ্লোগান হওয়া উচিত রোগ সারানো না রোগ প্রতিরোধ করা।