গর্ভবতী মায়ের খাবারের তালিকা
গর্ভবতী মায়ের জন্য ভীষণ উপকারী কিছু খাবার নিয়ে কথা বলবো।
গর্ভকালীন সময় সঠিক খাবার গর্ভের শিশু ও মাকে অনেক রোগ থেকে রক্ষা করে।
যেমন:- জন্মগত ক্রটি হওয়া,ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কম হয়ে যাওয়া, নির্ধারিত সময়ের আগেই সন্তান জন্ম নেওয়া।
এসব সমস্যার সম্ভবনা কমায় এসব খাবার ও লাইফ ষ্টাইল। প্রথমেই একটা সহজ খাবার দিয়ে আলোচনা শুরু করি।
১। ডিম :- গর্ভের শিশুর যে ব্র্ইেন ও মস্তিক তৈরি হচ্ছে সেই ব্রেইন যাতে ভালোভাবে তৈরি হয় ।
সে জন্য দরকার কোলিন নামক ভিটামিন বা পুষ্টি।
কোলিন ভিটামিন আমাদের খাবার থেকেই নিতে হয়।
কারণ এটা ভিটামিন বা মাল্টিভিটামিন থেকে পাওয়া যায় না। আর ডিম হলো কোলিনের ভালো একটা উৎস।
কোলিন ছাড়াও ডিমে এতো পুষ্টি উপাদান আছে যা আর কোথায় নেই।
গবেষকরা ডিমকে ন্যাচারাল মাল্টিভিটামিন বলে। একটা বিষয় খেয়াল করবেন, গর্ভকালীন ডিম কাচা বা অল্প সিদ্ধ খাওয়া যাবেনা।
ডিম অবশ্যই ভালোভাবে সিদ্ধ করে খেতে হবে।
ডিমের খাল ও কসুম পুরাপুরি সিদ্ধ হয় সেটা খেয়াল রাখতে হবে।
কারণ সিদ্ধ কম হলে পেটে জীবাণু ডুকে গর্ভের শিশুর ক্ষতি হতে পারে।
গর্ভবতী মায়ের খাবারের তালিকা
কোলিন ভিটামিন আরো অন্যানো খাবারে পাওয়া যায় তবে সেসব খাবার পরিমান মতো খেতে হবে।
২। ক্যাসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার : গর্ভ অবস্থায় ক্যালসিয়াম খুবই গুরুত্বপূর্ণ্য ।
প্রথমতো গর্ভের শিশুর হাড় ও দাঁত মুজবত করার জন্য ক্যালসিয়াম প্রয়োজন মায়ের রক্তচাপ ঠিক রাখার জন্য অনেক সময় গর্ভ অবস্থায় অনেকের রক্তচাপ বেড়ে যায়।
অনেক সময় গর্ভকালীন সময়ে অনেকের রক্তচাপ বেড়ে অনেক জটিল রোগ দেখা দেয়।
এসব রোগের সম্ভবনা কমাতে দরকার ক্যাসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার। ক্যাসিয়ামের ভালো উৎস হলো দুধ।
এবার তাহলে আসি আপনি কতটুকু দুধ খাবেন। অনেক গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিদিন ৩ কাপ পরিমান দুধ খাওয়া দরকার।
অনেক সময় এসব খাবার পরে যদি আপনার মনে হয় ক্যাসিয়াম পযাপ্ত পাচ্ছেনা তবে ডাক্তারের পরার্মশ নিবেন।
৩। শাখ :- গর্ভ অবস্থায় আমরা শাখ খাওয়ার পরার্মশ দেই আসলে দ্ইু কারণে।
শাখের অধিক পরিমাণে ফলিট ও আয়রণ ভিটামিন থাকে মায়ের গর্ভে যে শিশুর মাথার খুলি এবং ব্রেইন, মেরুদন্ডে যে শির তৈরি হচ্ছে এগুলো ভালোভাবে তৈরি হতে সাহায্য করে।
ফলিটের যদি ক্রটি হয় তবে শিশু অনেক জন্মগত ক্রটি হতে পারে।
খুব অল্প কিছু ক্ষেত্রে শিশুর মাথার খুলি পুরাপুরি তৈরি না হয়ে জন্ম হয় তবে শিশু মারা যাওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকতে পারে।
তবে এটা মা-বাবার জন্য খুব কষ্টদায়ক ঘটনা। তাই শাখ খাওয়ার কোন বিকল্প নেই।
গর্ভবতী মায়ের খাবারের তালিকা
৪। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার: কেন ভিটামিন-সি গর্ভ অবস্থায় দরকার সেটিই এখন বলবো।
আপনারা জানেন শরীর এমন কিছু ভিটামিন আছে যা জমিয়ে রাখতে পারে। সেই ভিটামিন হলো ভিটামিন-ডি। ভিটামিন-সি এর ক্ষেত্রে এমনটা না।
শরীর কিন্তু ভিটামিন-সি আমাদের শরীর জমিয়ে রাখতে পারেনা।
তাই প্রতিদিন আমাদের খাবার থেকে ভিটামিন সি সংগ্রহ করতে হয়।
গর্ভকালীন অন্য ভিটামিনের তুলনায় ভিটামিন- সি খুব দরকার। ভিটামিন- সি শিশুর দাঁত ও দাতের মাড়ি তৈরিতে সাহায্য করে।
শরীরের হাঁড় তৈরি জন্য ভিটামিন- সি প্রয়োজন।
গর্ভবতী মায়ের খাবারের তালিকা
তাই গর্ভ অবস্থায় এমন খাবারে ভিটামিন সি আছে সেসব খাবার খাওয়া। আমরা চিন্তা করি যে শুধু ভিটামিন -সি টক জাতীয় খাবার থেকে পাওয়া যায়।
টক জাতীয় ফল ছাড়াও অনেক জাতীয় ফল থেকে ভিটামিন- সি পাওয়া যায়।
টক জাতীয় ফল ছাড়াও ভিটামিন সি পাওয়া যায় এমন কিছু সবজি ও ফলের নাম বলছি সেগুলো থেকে ভিটামিন সি পাওয়া যায়।
যেমন, টমাটো, বাঁধা কপি, ক্যাপসিকাম করোলা , কাকরুল ইত্যাদি থেকে ভিটামিন সি পাওয়া যায়।
৫। ডাল: গর্ভকালীন কেন ডাল খাবেন? সেটি এখন বলছি। প্রথম কারণ, আমাদের শরীরে যে পরিমাণ আমিষ ও প্রোটিন দরকার হয় সেটি আমরা প্রতিদিন খাইনা।
আমাদের খাবারে মধ্যে ভাত খাবার বেশি অভ্যাস। গর্ভকালীন সময়ে এমনি স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি আমিষ ও প্রোর্টিন প্রয়োজন।
কারণ প্রোটিন গর্ভের শিশুর শরীরের মাংস তৈরিতে সাহায্য করে। ডাল প্রোটিন ও আমিষের ভালো একটা উৎস।
দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে, অনেকের দেখা যায় কোনদিনও কোষ্ঠকাঠিন্ন হয়না কিন্তু গর্ভকালীন কোষ্ঠকাঠিন্ন তে ভুগে। গর্ভকালীন সময়ে যাতে এই সমস্যা না হয় সে জন্য ডাল খাওয়া দরকার।
তৃতীয় কারণ প্রথম গর্ভ অবস্থায় অনেক নারীর ডায়াবেটিস দেখা দেয়।
এই ডায়াবেটিস মা ও শিশু নিরপত্তা ঝুকিতে ফেলে। তাই গর্ভ অবস্থায় ডাল খেলে এই ঝুঁকি অনেকংশে কমে যায়।
গর্ভকালীন সময়ের মা ও শিশুর সঠিক বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিন ও পুষ্টি পায় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।